প্রাইমারি অটিজমের ৫ধরনের লক্ষণ

 প্রাইমারি অটিজমের ৫ধরনের লক্ষণ 

প্রাথমিক অটিজমের (Autism Spectrum Disorder) লক্ষণগুলো শিশুর জীবনের প্রথম কয়েক বছরের মধ্যে প্রকাশ পায়। এগুলো মূলত সামাজিক যোগাযোগ, আচরণ এবং ইন্দ্রিয়গত সংবেদনশীলতার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণত তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে দেখা যায়:

১. সামাজিক যোগাযোগের সমস্যাঃ

  • চোখের যোগাযোগ এড়িয়ে চলা: শিশুরা সাধারণত অন্যদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে বা তাকাতে পছন্দ করে না।
  • অন্যদের সঙ্গে মিশতে না চাওয়া: তারা সমবয়সীদের সাথে খেলতে বা সামাজিক সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী হয় না।
  • নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া: নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া বা অন্য কারও সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে অসুবিধা হয়।
  • অঙ্গভঙ্গি বা মুখের অভিব্যক্তি না বোঝা: শিশুরা অন্যের মুখের অভিব্যক্তি বা অনুভূতি ঠিকমতো বুঝতে পারে না।

২. বাক ও ভাষাগত সমস্যা:

  • বাক বিকাশে বিলম্ব: অনেক শিশু দেরিতে কথা বলা শেখে বা একদম কথা বলে না।
  • আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ: কিছু শিশু খুব আনুষ্ঠানিক বা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো কথা বলে, যেখানে শিশুদের সাধারণত এই বয়সে তেমন কথা বলার ধরন থাকে না।
  • একই কথা বারবার বলা: একই শব্দ বা বাক্য বারবার বলতে পছন্দ করে (যাকে "একলালিয়া" বলা হয়)।

৩. পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ:

  • একই কাজ বারবার করা: শিশুদের মধ্যে হাত নাড়ানো, দোল খাওয়া বা ঘুরপাক খাওয়ার মতো পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ দেখা যায়।
  • রুটিন পরিবর্তনে অস্বস্তি: দৈনন্দিন রুটিনে সামান্য পরিবর্তন হলেও তারা অস্বস্তি বোধ করে বা বিরক্ত হয়ে যায়।
  • নির্দিষ্ট কিছু জিনিসে অতিরিক্ত আগ্রহ: তারা নির্দিষ্ট একটি খেলনা, সংখ্যা, বা জিনিস নিয়ে অতিরিক্ত আগ্রহ দেখায়।

৪. ইন্দ্রিয় সংবেদনশীলতা:

  • শব্দ, আলো বা স্পর্শের প্রতি সংবেদনশীলতা: শিশুদের মধ্যে কোনো বিশেষ ধরনের শব্দ, আলো বা স্পর্শের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।
  • বিপরীত প্রভাব: কিছু ক্ষেত্রে তারা এসব সংবেদন থেকে খুব কম প্রতিক্রিয়া দেখায় বা একেবারেই না বুঝতে পারে।

৫. খেলার ধরণে অস্বাভাবিকতা:

  • কাল্পনিক খেলা কম করা: অন্য শিশুদের মতো কাল্পনিক বা সৃজনশীল খেলায় অংশ নিতে অনাগ্রহী।
  • খেলনা নিয়ে অনুপযুক্ত ব্যবহার: খেলনাগুলো অন্যভাবে ব্যবহার করা, যেমন গাড়ির চাকায় ঘুরপাক খাওয়া বা কোনো অংশ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ খেলা করা।

প্রাথমিক অটিজমের লক্ষণগুলো স্পষ্ট হলে, একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে সঠিক থেরাপি ও সহায়তা শিশুর বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন