১০টি চমকপ্রদ তথ্য যা আপনাকে তার মনোভাব বুঝতে সাহায্য করবে । বিড়ালের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ
বিড়ালের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য তাদের দেহভাষা বুঝতে পারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সাধারণত মিউ বা শব্দের মাধ্যমে নয়, বরং তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে। এখানে বিড়ালের দেহভাষা সম্পর্কে ১০টি মূল তথ্য তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে তাদের মনের ভাব বোঝাতে সাহায্য করবে।
১. লেজের অবস্থান: মেজাজের আভাস
বিড়ালের লেজ তার মেজাজের স্পষ্ট সূচক। যদি লেজ সোজা উপরের দিকে ওঠানো থাকে, তবে বিড়াল খুশি এবং আত্মবিশ্বাসী। যদি লেজ ফুলে যায় বা নিচের দিকে ঝুলে থাকে, তবে বিড়াল ভীত বা উদ্বিগ্ন।
২. কানের ভঙ্গি: মনোযোগ এবং সতর্কতা
বিড়ালের কান তার মানসিক অবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। যদি কান সামনের দিকে থাকে, বিড়াল আগ্রহী বা মনোযোগী। তবে যদি কান পেছনের দিকে বাঁকানো বা চেপে ধরা থাকে, এটি সাধারণত বিরক্তি, ভয়, বা আক্রমণাত্মক মেজাজের লক্ষণ।
৩. চোখের মণি: উত্তেজনা বা আরাম
বিড়ালের চোখের মণি তার মানসিক অবস্থা নির্দেশ করে। যখন বিড়াল আরামদায়ক অবস্থায় থাকে, তার মণি সাধারণত স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু উত্তেজিত বা ভয় পেলে তার মণি বড় হয়ে যায়। ধীরে ধীরে চোখের পলক ফেলা বিড়ালের আরামের প্রকাশ।
৪. পাশে গড়াগড়ি: বিশ্বাসের প্রতীক
যখন বিড়াল আপনার সামনে গড়াগড়ি খায় বা পেট দেখায়, এটি বিশ্বাসের চিহ্ন। বিড়াল সাধারণত তার পেটকে সুরক্ষিত রাখে, তাই পেট দেখানো মানে সে আপনাকে নিরাপদ মনে করছে। তবে সবসময় পেট ছোঁয়া পছন্দ করে না।
৫. ঘাড়ের পশম দাঁড়ানো: ভয় বা আক্রমণাত্মক আচরণ
যদি বিড়ালের ঘাড় বা পিঠের পশম দাঁড়িয়ে যায়, তবে এটি সাধারণত তার ভয়ের বা আক্রমণাত্মক মেজাজের লক্ষণ। এটি তাকে আরও বড় এবং শক্তিশালী দেখানোর জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ।
৬. মিউ বা গর্জন: শব্দের সাথে দেহভাষা
বিড়ালের মিউ করার ধরন এবং তার সাথে যুক্ত দেহভাষা বোঝা জরুরি। নরম মিউ সাধারণত স্নেহ বা খাবারের অনুরোধ প্রকাশ করে। তবে হেঁড়ে গর্জন বা ফোঁস ফোঁস করা, সঙ্গে কানের পিছনে বাঁকানো এবং লেজের ফোলা অবস্থা দেখলে বুঝতে হবে যে সে আক্রমণাত্মক বা ভয় পাচ্ছে।
৭. পা দিয়ে গাল বা শরীর ঘষা: স্নেহের প্রকাশ
বিড়াল যখন তার পা দিয়ে আপনার গায়ে ঘষে বা মাথা ঠেকায়, তা সাধারণত স্নেহের চিহ্ন। এসময় সে তার গন্ধ আপনাকে লাগাতে চায়, যা তার মালিকানা বা সম্পর্কের অনুভূতি প্রকাশ করে।
৮. লাফানো এবং লুকানো: সতর্কতার প্রকাশ
বিড়াল হঠাৎ লাফিয়ে উঠলে বা লুকিয়ে পড়লে, বুঝতে হবে সে কিছুতে ভয় পেয়েছে বা সতর্ক হচ্ছে। এটি সাধারণত অপ্রত্যাশিত শোরগোল বা নতুন পরিবেশের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া।
৯. ঘুমের ভঙ্গি: আরাম বা নিরাপত্তার অনুভূতি
বিড়ালের ঘুমের ভঙ্গি তার আরাম এবং নিরাপত্তার বোধ প্রকাশ করে। যদি সে পেট উপরে রেখে শুয়ে থাকে বা সোজা হয়ে ঘুমায়, তবে সে খুব নিরাপদ এবং স্বস্তিতে আছে। কুঁকড়ে শুয়ে থাকা মানে সে সতর্ক এবং প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে আছে।
১০. লেজ নড়ানো: মিশ্র বার্তা
কুকুরের মতো নয়, বিড়ালের লেজ নড়ানো সবসময় আনন্দের প্রকাশ নয়। যদি বিড়াল ধীরে ধীরে লেজ নাড়ায়, তবে সে ভাবছে বা বিরক্ত হতে পারে। দ্রুত লেজ নাড়ানো মানে সে উত্তেজিত বা বিরক্ত।
বিড়ালের দেহভাষা বুঝতে পারা তাদের সাথে সম্পর্কের উন্নতি করতে সাহায্য করবে। প্রতিটি বিড়ালের দেহভাষা ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণ এই বিষয়গুলো লক্ষ্য করলে আপনি তাদের অনুভূতি এবং মনের অবস্থা সহজেই বুঝতে পারবেন।